
গাজা শহর। মাটিতে মিশে যাওয়া একটি বাড়ির ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে আমি। তাকিয়ে আছি দিগন্তের দিকে। এভাবেই বইটির শুরু। লেখার একেবারে শেষ পর্বে, যেখানে লেখকের বাড়ি, সেখানে বেপরোয়া বোমাবর্ষণ শুরু করে ইজরায়েলি বাহিনী। প্রাণ হাতে নিয়ে পরিবারসহ তাঁকে পালাতে হয় দক্ষিণে, রাফা শহরের দিকে। পিছনে তাড় করে বোমা- বৃষ্টি। তবু অকুতোভয়। বইয়ের কাজ শেষ করা এবং শুরুটা সাজিয়ে দেওয়ার কাজে ছিলেন অবিচল। একবুক সাহস আর প্রত্যয় নিয়ে ক্রমশ হারিয়ে যেতে থাকা ইন্টারনেট পরিষেবার মধ্যে পাঠিয়ে গিয়েছেন একের পর এক অডিও। বইটি সেই অর্থে, একদিকে যেমন ১৯৪৮ থেকে প্যালেস্তিনীয় ভূখণ্ডে ইজরায়েলি দখলদারির ফসল– তেমনই ২০০৮ থেকে এবং অতি সম্প্রতি গাজায় ইজরায়েলি বোমাবর্ষণের সরাসরি ধারাভাষ্য। যদিও, বইটি গাজায় ২০২৩ সালের বেপরোয়া আগ্রাসন নিয়ে নয়। এটি আসলেই অসলো-আত্মসমর্পণ, দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান সূত্রের নামে সাম্রাজ্যবাদের বান্টুস্তান নির্মাণ নিয়ে তীক্ষ্ণ সমালোচনা। যেসব সংগঠন একসময় প্যালেস্তাইনের মুক্তির সংগ্রামে ঐতিহাসিকভাবে সমর্পিত প্রাণ ছিল, কীভাবে প্যালেস্তাইনের সংগ্রাম ও মুক্তির দাবিকে আড়ালে সরিয়ে রেখে– বিষয়টিকে নিছক প্রতীকে পরিণত করাটা তাদের নির্বিষ
কার্যকলাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে– তারও স্বীকৃতি রয়েছে এই বইয়ে। ইতিহাসের এক নতুন পর্বে–
প্যালেস্তিনীয় সংস্কৃতি, পরিচিতি সত্ত্বা এবং প্যালেস্তিনীয় জনগণের ভবিষ্যতের ওপর নেমে
এসেছে এক অভূতপূর্ব চাপ। এই সময়ে উপনিবেশবাদ-মুক্ত প্যালেস্তিনীয় চেতনা দাবি করছে
চেতনার-ও পরিবর্তন। লেখক হায়দার ঈদ গাজার আল-আসকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর-উপনিবেশ
ও উত্তর-আধুনিক সাহিত্যের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর। লিখেছেন ‘ওয়ার্ল্ডিং’ পোস্টমডার্নিজম:
ইন্টারপ্রেটিভ পসিবিলিটিজ অফ ক্রিটিক্যাল থিয়োরি এবং কাউন্টারিং দ্য প্যালেস্টিনিয়ান
নাকবা: ওয়ান স্টেট ফর অল-র মতো বই।