
বাংলা সাহিত্যের কবিয়ালদের উদ্ভব আকস্মিক বা তৎকালীন বাবু সমাজের
খেয়ালখুশিতে নয়। মোটামুটি ভাবে যদি আমরা বাংলা সাহিত্যের প্রচলিত
ধারার দিকে দেখি, তাহলে দেখা যাবে আদি থেকে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত বাংলা
সাহিত্যের সমগ্র ধারাই গীতধর্মী। যাত্রা কবি ও পাঁচালিকাররাই এ ধারার শেষ
উত্তরাধিকারী। এবং শুধু তাই নয় এই কবি-গান, যাত্রা-গান ও পাঁচালি-গানের
মধ্যেই শাক্ত ও বৈষ্ণব - বাংলার এই চিরন্তন ধারা মিলিত হয়েছে। বাঙালিগণ
একই সঙ্গে শাক্ত ও প্রেমের পূজারি, একথা তাঁরাই প্রথম বললেন তাঁদের
গানের মধ্য দিয়ে। যাত্রা, পাঁচালি এবং কবি-গান এ তিনেরই প্রাণ প্রতিষ্ঠা গীতি-
মু
খরতায়। চর্যা থেকে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন হয়ে যে গীতিধারা বৈষ্ণবে এসে মিশেছিল-
তারই মূল গতি, শাক্ত সংগীতে মিলিত হল। তারপর চলে গেলেন ভারতচন্দ্র।
ইংরেজ হাত বাড়াতে লাগল বাংলার সংস্কৃতির উপর- এ থেকে পাশ কাটিয়ে
একান্তই নিজস্ব গীতিধারার অনুসন্ধান যাত্রা পাঁচালি এবং কবি-গান।
এইরকম এক কবি-গায়ক, কবিয়াল অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি। তাঁকে নিয়েই এই আখ্যান।