
উপন্যাসের নায়ক কাজল উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশেই পড়াশোনা করত।
একদিন তার কাছে খবর যায় তাঁর বিত্তশালী এবং ভীষণ প্রভাবশালী
ক্ষমতাবান বাবা ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন। অবাক হয়
কাজল। দেশে ফিরে জানতে পারে বাবার মৃত্যুর জন্য দায়ী ইব্রাহিম গাজি
নামে এক লোক, যে থাকে জলেশ্বরী বলে একটি গ্রামে। কাজল নৌকা
নিয়ে বেরিয়ে পড়ে সেই লোককে খুঁজতে।
নদীর পানিতে ঘোলা ঘূর্ণি, মানুষের চোখেও। ঘর বাড়ি ডুবে
গেছে, ফসলের জমি ভেসে গেছে, কলা গাছের পাশে ভেসে যাচ্ছে মানুষের
লাশ। সবাই ছুটছে এক খন্ড ডাঙ্গার খ�োঁজে। নরক শুধু জ্বলন্ত হয় না,
ডুবন্তও হয়। আটাশি সনের বন্যায় মেঘনার পাড়ের মানুষগুলো তা নতুন
করে বুঝেছিল। দুজন বাচাল মাঝি আর একটি নৌকা নিয়ে সেই নরকেই
ভেসে বেড়াচ্ছে আমেরিকা প্রবাসী কাজল। বইপত্রে পড়া মিথ্যা গ্রাম
পেরিয়ে সে চলে এসেছে বন্যায় ডুবে যাওয়া বাস্তব গ্রামে যেখানে কৃষক হাসিমুখে হাল নিয়ে মাঠে যায় না, ছেলের লাশ ভাসায় পানিতে। যেখানে
বাচ্চারা চড়ুইভাতি খেলে না, অনাহারে ক্লান্ত হয়ে মু
খ হা করে বাতাস
গিলে। যেখানে ডানপিটে মেয়ের জন্য বাজার থেকে আলতা কিনে আনে
না বাবারা, ক্ষুধা মেটানোর জন্য বজরায় চড়া বাবুদের কাছে বিক্রি করতে
নিয়ে যায়। যেখানে সাধুরা সব চোর হয়ে গেছে। সেইসব গ্রামে বাঁশির
সুর নেই, আহাজারি আছে। বুনো ফুলের সুবাস নেই, লাশের গন্ধ আছে।
সেখানে জীবন আছে, আছে সংগ্রাম। সেখানেই কোথাও আছে জলেশ্বরী,
যাকে খুঁজতে বেড়িয়েছে কাজল।
কিন্তু পৌঁছতে পারে কি জলেশ্বরী গ্রামে?
খুঁজে কী পায় বাবার আত্মহত্যার রহস্যের কারণ?
