
আধুনিক সময়ে নারী-পুরুষের দাম্পত্য যেন সরু সুতোর বন্ধন, কিংবা কাচের তৈজস, ছিন্নসম্ভব ও ভঙ্গুরপ্রবণ। বাঙালি জীবনেও ঘনিয়ে উঠেছে বিবাহবিচ্ছেদের সমাধান। চারদিকে নিঃশব্দ ভাঙনে স্পষ্ট হচ্ছে সমাধান ও সংকট। এই ভাঙন তো কেবল দুটি নারী-পুরুষের নয়, তার লগ্ন আছে সমাজবাস্তবতায়। ১৯৫৫ সালে চালু হয়েছে বিবাহবিচ্ছেদ আইন সম্পর্কের ভাঙনে তুলনায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত নারী। তবু, স্বীকার করতেই হবে, নষ্ট শসা পচা চালকুমড়োর মতো অসুখী দাম্পত্য থেকে বেরিয়ে নতুন আকাশের নীচে দাঁড়ানোর সুযোগ নারীকে দিয়েছে বিবাহবিচ্ছেদই। লিঙ্গ-অসাম্যের বিরুদ্ধে নারীর লড়াই রাষ্ট্রের মান্যতা পায়। গঠিত হয় মহিলা কমিশনও। যদিও, আমাদের পাঠ্যক্রমে মানবীবিদ্যার সংযোজন বেশি দিনের নয়। কিন্তু, সাহিত্যের পৃষ্ঠায় নারী নিজের মহিমায় হয়ে উঠেছে স্বাতন্ত্র্যময়ী। বাংলা উপন্যাসে আধারবাহিত বিবাহবিচ্ছেদের নারীবাদী সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ এই গ্রন্থের প্রতিপাদ্য। বাংলা উপন্যাসে ধারাবাহিক চলনের সঙ্গে নারীবাদী কবির ব্যাখ্যা ও বিষাদ যেন ওতপ্রোত এই বইয়ে। বিবাহবিচ্ছেদের নির্বাচিত আখ্যানগুলি তত্ত্ব ও তথ্যের ভারে নুয়ে পড়েনি একটুও। হয়ে উঠেছে একটি স্বতন্ত্র আখ্যান।