AAJ KAAL EBONG

Rs. 300.00 Rs. 270.00
Tax included. Shipping calculated at checkout.
  • Author(s):
  • Editor(s):
  • Translated by:
  • ISBN:
  • Binding:
  • Language:
  • No. of Pages:
  • Year of Publishing:
  • Publisher: Boitoi
People are viewing this item right now.
Vendor: Boitoi
SKU: LALMATI-AKE
Availability : In stock Pre order Out of stock
Categories: Book's Corner, Fiction
amazon paymentsamerican expressapple paygoogle paymastervisa
Description

কলকাতার ব্যস্ত রাজপথে আজ যেন জনসমুদ্রের প্লাবন। সবাই ছুটে চলেছে তাদের নির্দিষ্ট লক্ষ্যে; অফিস-কাছারি, ব্যবসা-বাণিজ্য; যেন ঘড়ির কাঁটার প্রতিটা সেকেন্ড স্বর্ণচূর্ণের এর মতোই মূল্যবান, অনেক দেখে, অনেক বাঁচিয়ে খরচ করতে হয়। সর্বক্ষণ সেই দুর্মূল্য জিনিসের খোঁজেই ব্যস্ত সবাই।এটাই যেন এখন শহরের নিয়ম।

কিন্তু নিয়মের মধ্যেও ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে কি?ওই যে দুজন মানুষ ধীরপায়ে স্মিতহাস্যে চলেছেন, ওঁরা যেন একটু অন্যরকম। দেখতেও যেন আর পাঁচটা লোকের থেকে একটু আলাদা। কোনো তাড়াহুড়ো নেই, নেই কোনো ইঁদুর দৌড়ের প্রচেষ্টা। তাঁদের নিজস্ব গতিতে, সময় নিয়ে সন্ধানী দৃষ্টি সহযোগে এগিয়ে যাচ্ছেন। মনের মধ্যে চলছে নিরন্তর খোঁজ।

মনে মনে ভাবতে ভাবতে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে থাকেন দুজন মানুষ। প্লাবন? জনসমুদ্রের? ঠিকই। কিন্তু সবাই তো নিজের স্বার্থপূরণের লক্ষ্যেই ব্যস্ত। অন্যের দিকে তাকানোর সময় আছে কি কারুর? এর মধ্যে তেমন মানুষ কোথায় যার সন্ধান করছেন তাঁরা!!

এমন মানুষ, যে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করবে মানুষের জন্য, যে হবে পরিবর্তনের অনুঘটক, যার আপন দ্যুতির মাধ্যমে চারপাশের এই ‘আপনারে লয়ে বিব্রত’ মানুষজনের মধ্যে আসবে গঠনমূলক বদল।

এটাই তাঁদের স্বপ্ন।এক উন্নততর, স্বার্থহীন সমাজ। বছরের পর বছর ধরে তাঁরা এরই সন্ধানে ব্রতী হয়েছেন। অনেকেই এসেছে। তাদের মাধ্যমে আবার নতুনভাবে ভাবতে শিখেছে আরও অনেক মানুষ। এরা নামহীন, গোত্রহীন, পদবিহীন।কেউ চেনে না এদের।কিন্তু ওরা আছে।দেশে দেশে ছড়িয়ে সমাজের মঙ্গলের জন্যে নিজেদের উৎসর্গ করেছে ওরা সবাই।

ভাবনায় ছেদ পড়ে।একটা কিছু হয়েছে রাস্তায়।কার যেন একটা চিৎকার।লোক জমা হচ্ছে।দেখার জন্য এগিয়ে যান দুজনে।

একজন মানুষ, সম্ভবত শ্রমিক হবেন, সাংঘাতিকভাবে আহত।পথচলতি একটা গাড়ি রাস্তা পারাপারের সময় ধাক্কা মেরে পালিয়েছে।লোকটি অত্যন্ত আহত।রক্তে ভেসে যাচ্ছে মুখ, পরিধানের পোশাক, যা এখন প্রায় ছিন্নভিন্ন।চারপাশের লোকজন পাথরের মূর্তির মত দেখছে।শুধুই দেখছে।পুলিশ সরানোর চেষ্টা করছে সবাইকে।আর একটা মৃত্যুদৃশ্য হয়ত কিছুক্ষনের মধ্যেই অভিনীত হবে।

কিন্তু...ভিড়ের মধ্যে বাইরে থেকে কে যেন ঢুকলো না?তারপর এগিয়ে এলো?দেখতে থাকেন তাঁরা।

উত্তেজিতভাবে কি যেন বোঝাচ্ছে সবাইকে।আর ওর কথাও শুনছে লোকজন।মানসিকভাবে মৃত মানুষগুলোর মধ্যে যেন প্রাণসঞ্চার হয়েছে।ওই তো, একজন ডেকে দিচ্ছে একটা ট্যাক্সি, আর তাতে ওই রক্তমাখা লোকটিকে নিয়ে ছেলেটি উঠে পড়লো।ওঁরা শুনতে পেলেন, ছেলেটি বেশ জোরের সঙ্গে বলছে, ‘তাড়াতাড়ি চলুন, এমার্জেন্সি কেস।হসপিটাল যেতে হবে।দরকার হলে ডবল ভাড়া দিয়ে দেব’।

গলার আওয়াজে কিছু একটা ছিল, ড্রাইভারও আর দুবার না ভেবে স্টার্ট দিলো গাড়িতে।

এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছেন তাঁরা দুজনেই , টাক্সিটার দিকে।চলতে শুরু করেছে সেটা।এইমাত্র যে ঘটনাটা ঘটে গেল, তা বোধহয় একজন মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির যথেষ্ট পরিচয় দেয়।এটাই দরকার।জনপ্লাবনের মধ্যে এ যেন এক জলপ্লাবন।যা সবকিছু ভাসিয়ে দিয়ে যায়।ছেলেটির সঙ্গে পরিচয় করার দরকার।এদের মত মানুষকেই খুঁজছেন তাঁরা।

একটা ট্যাক্সি আসছে আবার।হাত দেখিয়ে দাঁড় করান তাঁরা।কাটা কাটা বাংলায় বলেন ‘সামনের গাড়িটাকে ফলো করুন’।